🌺 ফুল পরিচিতি: কৃষ্ণচূড়া (Delonix regia)
কৃষ্ণচূড়া একটি দৃষ্টিনন্দন ও জনপ্রিয় বৃক্ষজাতীয় উদ্ভিদ, যার বৈজ্ঞানিক নাম Delonix regia। এটি Fabaceae (বা ফাবাসিয়ি) পরিবারভুক্ত এবং অনেক স্থানে গুলমোহর নামেও পরিচিত। চমৎকার ছায়া ও চোখ ধাঁধানো রঙের ফুলের জন্য কৃষ্ণচূড়া গাছ বিশেষভাবে প্রশংসিত।
এই গাছ মূলত মাদাগাস্কারের শুষ্ক পত্রঝরা অরণ্যে পাওয়া গেলেও বর্তমানে পৃথিবীর বহু দেশে এটি চাষ করা হচ্ছে। যদিও মাদাগাস্কারে এটি এখন প্রায় বিলুপ্তপ্রায়, কৃষ্ণচূড়া গাছ বিশ্বের উষ্ণ ও নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে সহজেই বেড়ে উঠতে পারে।
🌿 গাছের বৈশিষ্ট্য
-
কৃষ্ণচূড়া সাধারণত ১২ মিটার পর্যন্ত উঁচু হয়, তবে এর ডালপালা পাশের দিকে বিস্তৃত হয়ে ছায়াদানকারী বৃক্ষরূপে পরিচিত।
-
এর পাতা জটিল ও দ্বিগুণ পিন্নিত (compound leaves)। প্রতিটি পাতার দৈর্ঘ্য ৩০-৫০ সেন্টিমিটার, এবং প্রতি পাতায় থাকে ২০-৪০টি উপপত্র। পাতাগুলো উজ্জ্বল সবুজ এবং গ্রীষ্মকালে অনেকটা ফার্ন পাতার মতো দেখায়।
🌸 ফুলের বর্ণনা
-
কৃষ্ণচূড়ার সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হলো এর ফুল। গাঢ় লাল, কখনও কমলা বা হালকা হলুদ রঙের ফুল গাছে দৃষ্টিনন্দন সৌন্দর্য যোগ করে।
-
প্রতিটি ফুলে চারটি বড় পাপড়ি থাকে, যেগুলোর দৈর্ঘ্য প্রায় ৮ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হতে পারে।
-
বাংলাদেশে বসন্তকালে এই ফুল ফোটে, তবে বিভিন্ন দেশে আবহাওয়া অনুযায়ী ফুল ফোটার সময় ভিন্ন হতে পারে।
☀️ পরিবেশ উপযোগিতা
-
কৃষ্ণচূড়া গাছ বিশেষভাবে উষ্ণ ও শুষ্ক আবহাওয়ায় টিকে থাকতে পারে। এমনকি এটি লবণাক্ত মাটি সহ্য করতে সক্ষম।
-
গ্রীষ্মকালে শুষ্ক অঞ্চলে পাতা ঝরে পড়লেও নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে এটি চিরসবুজ বৃক্ষ হিসেবে টিকে থাকে।
-
গাছটি শহরাঞ্চলে ছায়া দেওয়া এবং রাস্তার পাশে সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য বহুল ব্যবহৃত।
🌍 বিস্তার
এই গাছ বর্তমানে বাংলাদেশ, ভারত, আফ্রিকা, হংকং, তাইওয়ান, দক্ষিণ চীন, ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জসহ বিশ্বের বহু দেশে রোপণ ও পরিচর্যা করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রে এটি বিশেষত দক্ষিণ ফ্লোরিডা, দক্ষিণ-পশ্চিম ফ্লোরিডা, এবং টেক্সাসের রিও গ্র্যান্ড উপত্যকা অঞ্চলে পাওয়া যায়।
কোন মন্তব্য নেই